৯৯ শতাংশ মানুষ জানেন না বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল কাপড়ের ঐতিহাসিক কাহিনী

বিরিয়ানি (Biryani) খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ আমাদের দেশ ভারতবর্ষে বর্তমান সময়ে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এই পদের জনপ্রিয়তা যেন আকাশ ছুঁয়ে ফেলেছে। নামী-দামী রেস্টুরেন্ট ছাড়াও এখন প্রায় সব জায়গাতেই বিরিয়ানির দোকান দেখতে পাওয়া যায়। বিরিয়ানির দোকানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় লাল কাপড়ে মোড়ানো বড়ো হাঁড়ি থেকে ভেসে আসা সুবাস সকলের মন উচাটন করে দেয়। বিশেষত যেসব স্থানে রাস্তার পাশে দোকান রয়েছে সেখানে এই একই দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়।
তবে এই বিষয়টি কি কখনও ভেবে দেখেছেন কেন প্রতিটি দোকানের বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল কাপড় জড়ানো থাকে! বিরিয়ানির হাঁড়িতে এই লাল কাপড় জড়িয়ে রাখার পেছনে এক ঐতিহাসিক কারণ রয়েছে। ভারতবর্ষে বিরিয়ানির প্রচলন প্রথম হয়েছিল দিল্লি ও লখনৌতে। এই কথা প্রায় সকলেরই জানা যে বিরিয়ানি আসলে এক মুঘল খাবার, যা মুঘল আমলেই ভারতবর্ষে খাওয়া শুরু হয়েছিল। বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল কাপড় জড়ানো এক মুঘল রীতি। মুঘলদের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় তাঁদের সব খাবার পরিবেশনের সময় লাল রঙের কাপড় ব্যবহার করা হতো।
বিভিন্ন রঙ যে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন বার্তা বহন করে তা আমরা সকলেই জানি। তেমনভাবেই লাল রঙকে সৌভাগ্য, উষ্ণতা, আনন্দ-উৎসব ও ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। মুঘল সম্রাট হুমায়ুন একবার যুদ্ধে পরাজিত হয়ে রাজ্য হারিয়ে সুদূর ইরানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সময়। তাকে লাল বাগিচা পেতে সাদরে অভ্যর্থনা জানানো হয়। খাবার পরিবেশনের সময় সমস্ত ধাতব পাত্র ঢাকার জন্য লাল কাপড় ও চিনামাটির পাত্র ঢাকার জন্য সাদা কাপড় ব্যবহার করা হয়। পরবর্তী সময়ে মুঘলদের মধ্যেও খাবার এইভাবে পরিবেশন করার রীতি চালু হয়ে যায়। আর এই ঐতিহ্যই বিরিয়ানির হাঁড়ির ক্ষেত্রে সারা ভারতজুড়ে এখনও চলছে।